Category: Bank

  • Dual Currency Card

    সতর্কতাঃ এগুলো আমার অভিজ্ঞতা, পাবলিক গ্রুপের রিভিউ থেকে পাওয়া অন্যের অভিজ্ঞতা। চরম সত্য / অপরিবর্তনযোগ্য কিছু না। যে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আগে নিজে খোঁজ-খবর নিন, যাচাই বাছাই করুন।

    বাংলাদেশ থেকে বিদেশী ওয়েবসাইটে পেমেন্টের জন্য সলিউশন আমার জানামতে নিম্নরুপ

    ১। প্রিপেইড কার্ড

    বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত।

    ইসলামী ব্যাংক ২০২১-২০২২ সালে সম্ভবত বেশ কয়েক হাজার গ্রাহককে ফ্রিতেই প্রিপেইড কার্ড দিয়েছিলো, যা পরে আর কন্টিনিউ করেনি। আমিও একটা নিয়েছিলাম। তবে মার্ক-আপ চার্জ ছিলো সম্ভবত ২%।

    মার্ক আপ চার্জ – ডায়নামিক কারেন্সি কার্ড হচ্ছে- কার্ডে টাকা/BDT থাকবে। টাকা থেকে যখন যে কারেন্সিতে পেমেন্ট করা হবে, সেই বিদেশী কারেন্সীতে কনভার্ট হয়ে যাবে, কিন্তু এক্সট্রা ২% চার্জ কাটবে প্রতিবার। UCB / Upay প্রিপেইড কার্ডেও প্রায় একই নিয়ম।

    এর বিপরীতে হয় ডুয়েল পার্ট কার্ড, যেখানে দু’টি পার্ট থাকে। BDT & USD – প্রতি পার্টে তার উপযুক্ত মুদ্রা থাকে।

    মিডল্যান্ড ব্যাংকও সম্ভবত ফ্রিতে/এককালীন ৫৭৫ টাকায় প্রিপেইড কার্ড দিতো। কিন্তু ওদের অ্যাপ+অনলাইন সিস্টেমের বেশ কিছু সমালোচনা/অভিযোগ দেখেছিলাম, আরো কী কী যেন দেখেছিলাম, তাই আগ্রহী হইনি।

    অবশ্য কিছু কিছু ব্যাংক প্রিপেইড কার্ডকে কাস্টমার ধরার ফন্দি হিসেবে বানিয়ে নিয়েছে।

    যেমন, “হলুদ-মিডিয়া”র মত একটা হলুদ-ব্যাংক আছে, তারা আগে ৫৭৫ টাকায় ৩ বছরের জন্য কার্ড দিতো, ৩ বছরের জন্য এন্ডোর্স করে দিতো। পরে তারা প্রতি বছর ৫৭৫ নেয়া শুরু করলো। আরো পরে sms alert fee প্রায় ৩০০ টাকা ধার্য করলো। তারপর ৫৭৫ কে দ্বিগুণ করে দিলো। এবং সর্বোচ্চ ৬ মাসের জন্য এন্ডোর্স করে দিতে লাগলো।

    ১০০০+ টাকা প্রতি বছর দিয়ে কোনো প্রিপেইড কার্ড প্রতি ৬ মাসে একবার করে এন্ডোর্স করে চালানোর কোনো মানেই হয় না।

    অসুবিধাঃ

    ১। প্রিপেইড কার্ডের অসুবিধা হচ্ছে- খুবই সীমিত আকারে অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে এই কার্ড গ্রহণ করা হয় না। এমন আমি AliCloud & Azure এর ক্ষেত্রে এই কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করতে / সাবস্ক্রিপশন নিতে পারিনি, অথচ AWS এ ঠিকই পেরেছিলাম! (এছাড়া গুগল প্লে স্টোরেও ঠিক ছিলো)।

    ২। ডুয়েল পার্ট কার্ডের ক্ষেত্রে বারবার কনভার্ট করার ঝামেলা। অনেক্ষেত্রে কনভার্ট করার আবেদনের পর ৬-১২ ঘন্টা লেগে যাওয়া। আর ডায়নামিক কারেন্সি কার্ডের ক্ষেত্রে অনেকক্ষেত্রেই ২% চার্জ দিয়ে বছরে ১৫-৩০ ডলার চার্জ দেয়া হয়ে যেতে পারে, এরচেয়ে তো ফিক্সড হাজার টাকা দেয়াই ভালো।

    ২। ডেবিট কার্ড

    অনেক ব্যাংক / প্রায় প্রতিটা ব্যাংক থেকেই নেয়া যায়। ইউসিবির কিছু কার্ড ছিলো যেগুলোতে ডুয়েল কারেন্সি ছিলো না, সেগুলোকেও ঘোষণা দিয়ে ডুয়েল কারেন্সি করে দেয়া হয়।

    ৩। ক্রেডিট কার্ড

    আমি অনেক লেখায় এবং ভিডিওতে ক্রেডিট কার্ড কেন ব্যবহার করা উচিত না, তা দেখেছি। এবং কারণগুলো আমার যৌক্তিক ও বিবেচনাযোগ্যই মনে হয়েছে। এছাড়াও ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও তো…

    যাই হোক, ক্রেডিট কার্ডকেই তো ব্যাংক সেক্টর ‘যৌক্তিক’ কারণেই সবচেয়ে প্রায়োরিটি দেয়। কোনো কোনো ব্যাংক হয়ত ডেবিট কার্ডে ডলার/পাসপোর্ট এন্ডোর্সমেন্টের সময় ৩টা প্রশ্ন করলে ক্রেডিট কার্ডে হয়ত ১টা করে, বা করেই না।

    ৪। বিদেশি কার্ড

    WISE কার্ডের জন্য UK তে বিজনেস থাকতে হয়। Payoneer এর ক্ষেত্রে সম্ভবত প্রায় ৩০ ডলার বার্ষিক চার্জসহ আরো কী কী যেন।

  • Bank Account

    আমি একটা সময় ব্যাংক নিয়ে প্রচুর ঘাটাঘাটি করেছি। মোটাদাগে আমার গবেষণা-

    ১ লক্ষ লিমিট অ্যাকাউন্ট

    অনেকগুলো ব্যাংকেই ১ লক্ষ টাকা রাখা যাবে, তার বেশি রাখতে চাইলে ইনকাম সোর্স জমা দিতে হবে- এমন অ্যাকাউন্ট আছে। জীবনের প্রথম অ্যাকাউন্ট হিসেবে এটা ভাল।

    আমি IFIC Shohoz সহজ অ্যাকাউন্ট চালিয়েছি। অনলাইনে নিজে e-KYC (নিজের ফরম নিজেই পূরণ, NID এর ছবি জমা দেয়া)। তবে তারপর ব্যাংকে গিয়ে রেফারেন্স নম্বর বললে অনেকগুলো কাগজ প্রিন্ট করে সেগুলোতে সাইন করতে বলে। সেমি-ডিজিটাল জিনিসটা ভালো না। এতদিনে পরিবর্তন এসে থাকতে পারে।

    অ্যাপ সুন্দর ছিলো না, বেশ বাজে ছিলো। তবে ফ্রিতে NPSB ছিলো। ২০২২-২৩ এ। এখনো আছে কিনা জানি না।

    তারপর UCB Prothom অ্যাকাউন্ট খুলেছি। অনলাইনে খুলেছি, কার্ড আমার সিলেক্ট করা ব্রাঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাসায় চাইলেও দিতো। (এই অ্যাকাউণ্টে ২য় বছর থেকে এক্সট্রা চার্জ আছে, যেই চার্জের কথা আমি নিচে সাধারণ পূর্ণাঙ্গ অ্যাকাউন্ট-এ লিখেছি)।

    NRBC ব্যাংকসহ আরো অনেক ব্যাংকের এরকম অ্যাকাউন্ট আছে।

    এসব অ্যাকাউণ্টে শুধু কার্ডের বাৎসরিক ফি এবং SMS বাবদ চার্জ থাকে। ৪০০-৪৫০ টাকায় এক বছর (বা প্রথম বছর) চলে যায়।

    এই অ্যাকাউন্টে কোনো ব্যাংক টাকা তোলার জন্য চেক দেয়, কোনো ব্যাংক দেয় না (অ্যাকাউণ্টের টাকা চেক দিয়ে তোলাই যাবে না), আবার কোনো ব্যাংক ফ্রিতে দেয় না। (অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিয়ে চেক দেবে, পাতা প্রতি ৩-১০ টাকার মত হতে পারে। ১০ পাতার চেক ৩০ থেকে ১০০ টাকা)।

    সাধারণ পূর্ণাঙ্গ অ্যাকাউন্ট

    এসব অ্যাকাউণ্টে ইনকাম সোর্স দিতে হয়। এবং প্রতি ৬ মাসে টাকা রাখার কারণে ফি কাটে। এগুলোতে বছরে ৩-৪ কারণে ১২০০-১৮০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ কাটে।

    ১। কার্ড ফি – ৫০০ থেকে ১০০০

    ২। SMS ফি – ব্যাংকভেদে ৫০-১০০ বছরে একবার বা দুইবার।

    ৩। টাকা রাখার ‘অপরাধে’ ফি-

    ১০ হাজার পর্যন্ত গড় ব্যালান্স হলে ০ টাকা। ২৫ হাজারের কমে ১০০ টাকা এবং ২৫ হাজার থেকে দুইলক্ষ পর্যন্ত ২০০ টাকা। ২ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ – ৩০০ টাকা। (ব্যাংকের সব চার্জের সাথে থাকে ১৫% ভ্যাট)

    এরবেশি আরো কয়েকটা স্তর আছে, যা প্রত্যকের ব্যাংকের schedule of charges ডাউনলোড করে দেখে নেয়া যাবে।

    এভাবে বছরে দুইবার। তো বেশির মধ্যবিত্তের ক্ষেত্রে ২৪৫ টাকা (১৫% ভ্যাট সহ) দিতে হয়, তাও বছরে দুইবার। (যেহেতু ২৫ হাজার-২ লক্ষ রেঞ্জেই তাদের ব্যাংকে টাকা থাকে)

    এগুলো সেভিংস অ্যাকাউন্টে। কারেন্ট অ্যাকাউন্টে-যা মূলত ব্যবসায়ীদের জন্য- আরো বেশি চার্জ হতে পারে / হয়ে থাকে। কারেন্ট অ্যাকাউন্টে একবারে বেশি টাকা তুলে ফেলা যায়।

    যেহেতু কারেন্ট অ্যাকাউন্টের টাকা ঘনঘন তুলে ফেলা হয় / স্থির থাকে না- বারবার আসে-যায়, তাই এগুলোতে সাধারণত ‘সুদ’ ‘ইন্টারেস্ট’ ‘মুনাফা’ দেয়া হয় না।

    সুদ সাধারণত জুনের শেষে এবং ডিসেম্বরের শেষে দেয়া হয়।

    সতর্কতাঃ কেউ যদি জানুয়ারীর ১ তারিখে অ্যাকাউন্ট খুলে ১ লক্ষ টাকা ব্যাংকে রাখে এবং ডিসেম্বর মাসে ১,০৪,২৫০ টাকা পায়, সে যদি ‘সুদ’ থেকে বাঁচতে ৪২৫০ টাকা দান করে দেয়, তা হলে কিন্তু সে মুক্তি পেলো না।

    কারণ – সে আরো বেশী পেয়েছিলো (হয়ত ১,০৫,৮৫০ হতো)।

    বিভিন্ন চার্জ যা ব্যাংক কেটে থাকে- সেগুলো সুদের টাকা থেকে দেয়া যাবে না। দিলে তো ‘সুদ খাওয়া/ভোগ করা’ হয়ে গেলো।

    তাই স্টেটমেন্ট বের করে ব্যাংক কত কেটেছে তা হিসাব করুক বা না করুক- কত সুদ দিয়েছে তা হিসাব করতে হবে। সুদের ১০-১৫% আবার সরকার ভ্যাট হিসেবে কেটে নেয়, সেটা সুদের হিসাব থেকে বাদ যাবে।

    ৪। আবগারি শুল্ক

    বছরে একবার আবগারি শুল্ক কাটে। প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ যদি একবার এক লাখ টাকা বা তার ওপরের স্তরগুলোর সীমা স্পর্শ করে, তাহলে নির্দিষ্ট হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। একাধিকবার স্পর্শ করলেও একবারই আবগারি শুল্ক কাটা হয়। কোনো হিসাবে এক লাখ টাকার কম থাকলে কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হয় না।

    বর্তমানে এক লাখ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হয় না। আবার এক লাখ থাকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা এবং পাঁচ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়।

    উদাহরণ – একজন ৫০ হাজার টাকা সারা বছর অ্যাকাউন্টে রেখেছে, তার বাৎসরিক খরচ-

    ৫০০ কার্ড, ১০০ এসএমএস, ২৫ হাজারের বেশি গড় ব্যালান্স হওয়ার কারণে ২০০ করে দুইবার, মোট ১০০০ + ১৫% ভ্যাট, ১১৫০ টাকা ‘মাত্র’। (১ লক্ষের বেশি না হওয়ার কারণে ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক লাগেনি।

    কার্ডের চার্জ ১০০০ হলে বা বছরে একবারে/দুইবারে এসএমএস ফি মোট ১০০ না হয়ে আরো বেশি হলে মোটের পরিমাণ আরো বাড়তো।

    স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট

    স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফি, কোনো সার্ভিস ফি নেই। তবে ব্যাংকভেদে কিছু লিমিট থাকতে পারে।

    এছাড়াও ১৮ এর কম বয়সীদের অতিরিক্ত লিমিটেশন থাকতে পারে- যেমন- এত টাকার বেশি রাখা যাবে না, দিনে এত টাকার বেশি তোলা যাবে না / অভিভাবকের সাইন ছাড়া এত টাকার বেশি তোলা যাবে না।

    ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট চালাইনি, তবে শুনেছি বয়স ২৮ পর্যন্ত এটা ব্যবহার করা যায়। বেশ উদার!

    এছাড়া ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের সাথে সম্ভবত ডুয়েল কারেন্সি কার্ড দেয়, তবে বয়স লিমিট ২৫

    ফ্রিতে টাকা রাখা

    সেলফিন হচ্ছে ইসলামী ব্যাংকের অ্যাপ। সেখানে সাইন আপ করলে একটি অ্যাকাউণ্ট দিয়ে দেয়, কার্ডও দেয় (ভার্চুয়াল কার্ড তথা নম্বর, ছবি- বাস্তব কার্ড পাঠায় না)। সেই কার্ড দিয়েই অনলাইনে পেমেন্ট করা যায়। ব্যাংকে গিয়ে সেই কার্ড এন্ডোর্সও করা যায়।

    টাকা তোলা যায় ইসলামী ব্যাংকের বুথ থেকে।

    NPSB + EFT, Statement, রেমিটেন্স- সবই আছে। এবং উপরের কোনো ধরণের কোনো চার্জ ছিলো না। (এখন আছে কিনা- জানি না।)

    অনলাইনে ডলার পেমেন্ট / পাসপোর্টে ডলার এন্ডোর্সমেন্ট এবং ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের জন্য কোন ব্যাংক ভালো- সে সম্পর্কিত আরেকটি পোস্ট পরে লেখার ইচ্ছা আছে।