Category: Uncategorized

  • Not Awesome Next.js

    গত বছর চ্যাটপিজিটি তাদের ওয়েবসাইট Next.js থেকে রিমিক্সে মাইগ্রেট করে। তারপর থেকেই বিভিন্ন বড় বড় ব্যক্তিদের থেকে বিভিন্ন ভিডিও, আর্টিকেল ও টুইট দেখেছি- প্রত্যেকেই “Next.js কেনো ভালো না / Next.js থেকে সরে এসে ভালো করেছি” টাইপের লেখা লিখেছিলো।

    সে পর্যন্ত তাও ভালো / কম খারাপ ছিলো। কিন্তু গত সপ্তাহের nextjs middleweare vulnerability দেখার পর থেকে মন আরো উঠে গেছে। (ভার্সেল অবশ্য বেশ দ্রুতই ফিক্স করেছে।)

    এমন না যে- অন্য ফ্রেমওয়ার্ক (nuxt, astro) বা টুলে (vite) কোনোদিন কোনো vulnerability ছিলো না- কিন্তু Next.js এর এটি আসলেই অনেক বড়।

    এখানে আমি বেশ কিছু লিংক দিয়ে রাখি, যা ভবিষ্যতে আমার ও অন্যদের কাজে লাগবে।

    ১। You should know this before choosing Next.js by Eduardo Bouças, Netlify

    অনেক বড় লেখা, এবং আরো অনেক ব্লগ/আর্টিকেলের রেফারেন্স দেয়া আছে। কিন্তু পড়লে অনেক কিছু জানা যাবে।

    ২। Why I Won’t Use Next.js by Kent C. Dodds (epicweb.dev)।

    এটির অবশ্য ‘জবাব’ আছে, যার লিংক ব্লগের শেষে দেয়াও আছে- https://archive.leerob.io/blog/using-nextjs

    ৩। Remix vs Next.js official Remix blog

    ৪। How we run nextjs – Netlify blog

    এমনিতেও Astro বেশ ভালো করছে, React Router 7 / Remix যথেষ্ট অ্যাটেনশন পেয়েছে এবং পাচ্ছে। আমি গত জানুয়ারী/ফেব্রুয়ারীতে রিমিক্সের একটি ক্র্যাশ কোর্স দেখেছিলাম, এখন তো মনে হচ্ছে- খুব ভালোভাবেই শিখে ফেলবো।

    আরেকটা কথা- ২০+ ফ্রেমওয়ার্কের হোমপেজ ভিজিট করে আমার কাছে রিমিক্সের হোমপেজটাই সেরা লেগেছে- https://remix.run/

    8-sept-2025

    https://blog.meca.sh/3lxoty3shjc2z

  • Stunning Websites with Perfect UI

    updated: 13-sept-2025

    Posthog ওয়েবসাইটের ডিজাইনে পরিবর্তন করেছে। ব্রাউজারের ভিতর উইন্ডোজ স্টাইল।

    https://pudgypenguins.com ভালো লেগেছে।

    ***

    কিছু কিছু ওয়েবসাইটের মোবাইল ভার্সন বেশ সুন্দর লেগেছে।

    https://ticket.expo2025.or.jp/en

    https://www.16personalities.com

    উভয় সাইটের ডিজাইনে কমন বিষয় হচ্ছে- মোবাইল ভার্সনে উপরের ন্যাভিগেশন বার নিচে এসে যায়- আইকনসহ, মেনু হিসেবে।

    ডেস্কটপ ভার্সন সুন্দর – এমন সাইটের তো অভাব নেই।

    https://bunny.net – কিছুটা কমন, তবে সুন্দর।

    https://fly.io/ – আর্ট / পেইন্টিং স্টাইল, just awesome!

    https://posthog.com/ এবং https://sentry.io/ – উভয়টিই সুন্দর, তবে পোস্টহগের ওয়েবসাইট একটু বেশিই সুন্দর + মোবাইলেও চমৎকার।

    ব্লগ/ম্যাগাজিনের মধ্যে https://www.smashingmagazine.com/ সাইটটি ভালো।

  • পড়াশোনা ছেড়ে আফসোস?

    জনাব আরিফুল ইসলাম সাহেব একটি পোস্ট লিখেছেন। চাইলে নিউ ট্যাবে ওপেন করে পড়ে আসতে পারেন। না পড়লেও সমস্যা নেই- আমি প্রতিটি লাইন কনটেক্সটসহ কপি করবো।

    যদি না জেনে থাকেন- ঐ সময়টাতে ডা. শামসুল আরেফিন শক্তি, মেরাজ হোসাইন, **** ****, **** সহ অনেকে একটি বিষয় প্রচার করতেন। (ভবিষ্যতে ইনশা-আল্লাহ আমি আরো কিছু নাম যোগ করে দেবো।)

    যার খোলাছা হলো- (আমার বুঝ অনুযায়ী)

    ১। সহশিক্ষার খারাবি ও ইসলামী দৃষ্টিকোন।

    ২। নারী আর পুরুষের দৈহিক ও মানসিক সৃষ্টি এক না। যার ফলে পৃথিবীতে উভয়ের রোল, কাজ, দায়িত্ব এক না বা সমান না। সাথে বেশ কিছু রেফারেন্স।

    ৩। কিভাবে বৃটিশ শিক্ষাব্যবস্থা ‘চাকর’ বানানোর জন্য যতটুকু জ্ঞান লাগে- ততটুকু সিলেবাসে রেখেছে। ওদের দেশের আর একই সময়ে ওদের দেয়া বৃটিশ ভারতের সিলেবাসে আকাশ পাতাল তফাত।

    ৪। কে/কারা, কেন, কিভাবে নারীদের চাকরি/আয়ের প্রতিযোগীতায় নামানো হয়েছে এবং এর ফলে আপনার মেয়ে, মা এবং বোনের কী ক্ষতি হচ্ছে, আর কারা লাভবান হচ্ছে। পৃথিবীতে কী কী ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে- ইত্যাদি।

    ৫। গৃহিণী হওয়া বা মা হওয়ার মধ্যে কোনো লজ্জা নেই। জিডিপিত কাউন্ট হোক বা না হোক- আপনার অবদান গোণায় ধরা হোক বা না হোক- এটিই একটি পূর্ণ, মহান ও মহৎ পেশা।

    ৬। বিয়ে করা, সংসার শুরু করা, মাতৃত্বের আদর্শ বয়স কোনটি সেগুলোর আলোচনা

    এখন উপরের পয়েন্টগুলোর সাথে আপনি যদি একমত না হোন- এগুলোকে ‘সেকেলে’, ‘মান্ধাতার আমলের’ লাগে, সারা বিশ্বের নারীরা এই করেছে- ঐ করেছে- দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধান থেকেছে- এইগুলো যদি আপনার চিন্তাধারা ও অনুপ্রেরণা হয়- তাহলে পশ্চিমা বিশ্ব, বৃটিশ, কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড, মিডিয়া, বেগম রোকেয়া ইত্যাদি আপনার মস্তিষ্কের মালিকানা সফলভাবে পেয়ে গেছে, তাদেরকে ‘অভিনন্দন’!

    ***

    একটা প্রশ্ন অনেকের মাথায়/মনে আসে- তাহলে করবোটা কী? কী পড়বো? কতদূর পড়বো?

    আমি আসলে জানি না / আপাতত মাথায় আসছে না- তারা কী পড়তে বলতেন? (জেনারেল লাইন vs মাদরাসা), কতদূর পড়তে বলতেন?

    তবে যেটা মোটামুটি খোলাছা / যা বোঝা যেতো –

    ১। বিয়ের/মাতৃত্বের সেরা বয়সে বিয়ে করতে চাইলে অনেকদূর, বহুদূর পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করার সুযোগ নেই।

    ২। আজকাল ছেলেরা (পড়াশোনা যেই লাইনেরই হোক) কোন বয়সী মেয়েদের পাত্রী হিসেবে চায়, সেই বয়সের পাত্রীরা কতদূর পড়াশোনা করেছে। (একটি ভয় তৈরি হতো- “হায়হায়, তাহলে আমাকে কেউ বিয়ে করবে না”)

    যাই হোক- ২০২০-২০২২ সালে ওসব ‘ব্রেনওয়াশ'(?!) পড়ে অনেকে নাকি পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে, এবং এখন নাকি তারা আফসোস করছে!

    ***

    জনাব আরিফ সাহেবের পোস্টের আংশিক কপি ও তার জবাব শুরু-

    “২০২০-২২ সালে যারা ফেসবুক এক্টিভিস্টদের প্ররোচনায় হঠাৎ করেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাদের বেশিরভাগই এখন আফসোস করছেন!


    প্রথমতঃ বিজ্ঞানবাদীরা যেমন ধার্মিকদের থেকে “রিসার্চে প্রমাণিত হয়নি” “প্রমাণ পাওয়া যায়নি” বলে পিছলে যায়- আমিও একটু পিছলে যাবো।

    বলবো- “বেশিরভাগই” বলার জন্য আমাদের মোট সংখ্যা ও আফসোসকারীদের সংখ্যা জানতে হবে। “আমার ফিডে অনেকে আসে” (তবে লিংক দিতে পারবো না), “যেখানে যাই সেখানেই এরকম মেয়ে দেখতে পাই”- এসব ভাসা-ভাসা কথা গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত না।

    দ্বিতীয়তঃ (রাকিব নামক এক ভাইও ব্যাপারটি লিখেছেন) যারা ঐসব দেখে পড়াশোনা ছেড়েছে তাদের সবাই যে খুব পড়ুয়া ছিলো, খুব পড়ে পড়ে এবং রেজাল্ট ভালো করে উলটে দিচ্ছিলো- এবং পড়া শেষ করলেও দেশ-জাতির এমনকি নিজ পরিবারে বিপ্লব এনে ফেলতো- এমন না।

    অনেকেই আছে- যারা বাদ দিতে পারলে বাঁচতো। তারা ঐ ধর্মীয় আবেগের সুযোগ নিয়েছে।

    একটা Meme দেখেছিলাম- পেলে অ্যাড করে দেবো- আর আপনারা পেলে আমাকে ইমেইল করতে পারেন- (ফেসবুক পেইজে পেলে পেজের লিংক, নইলে শুধু ইমেজ)

    ছেড়েছে তারা- যারা নিচের মিমে হাহা রিয়্যাক্ট দিতো।

    মেয়েঃ (মনে মনে) “পড়ালেখা না করার জন্য বিয়ে করছি”,
    শশুর শাশুড়িঃ “আমরা তো সেকেলে না, আধুনিকমনষ্ক। পুত্রবধুকে বিয়ের পরেও পড়াবো”,
    মেয়েঃ “ধুর, …” (না পড়ার জন্য বিয়ে করছিলাম, আর এখানে এসেও পড়তে হবে! আবার সংসার)

    ঐ মিমে কিন্তু হাহা রিয়্যাক্ট যারা দিতো- অবশ্যই তাদের ১০০%-ই ছেলে না। কমেন্ট ও রিয়্যাক্ট দেখলে মেয়েদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে পাওয়া যেতো।

    তারাই- বলা ভালো- তাদের কেউ কেউ সুযোগ নিয়েছে।

    আর রাকিব ভাই আরো লিখেছেন- অনেকে ছাড়েনি, কিন্তু পড়ালেখা কমিয়ে দিয়েছে। ফার্স্ট হওয়ার বদলে পাশ করে করে পড়াশোনা শেষ করেছে। এখন তারা হতাশ!

    এক্ষেত্রে কথা হচ্ছে- সহশিক্ষা ছাড়তে বলা বা না করতে বলা মানে তো সিরিয়াসনেস কমিয়ে দেয়া না। পুরোপুরি পড়ালেখা বাদ দিতো, অথবা ভালোভাবেই পড়ালেখা কন্টিনিউ করতো- কিন্তু এই সিরিয়াসনেস কমানোর ভুল কাজের দায় কেন শক্তি-মেরাজ ভাই নেবেন?

    এছাড়া- এই যে রাকিব ভাই বললেন- তারা হতাশ- কেন হতাশ? চাকরি হচ্ছে না? নাকি বিয়ে হচ্ছে না?

    তারা কি সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন যে- চাকরি করবেন? আর এখন চাকরি না পেয়ে হতাশ! তাহলে সেটি তো নারীদের ক্যারিয়ারে অংশগ্রহনের বিরোধিতার আলাপে চলে গেলো! (নাকি এখন পরিস্থিতির শিকার হয়ে আয় করার জন্য নামতে হচ্ছে?)

    আর বিয়ে হচ্ছে না- কারণ পড়ালেখা একটু কম- এটি তো হওয়ার কথা না। কারণ তারা তো অল্পবয়সী হওয়ার সুযোগটা পাচ্ছেন!

    দুটি জিনিসের কথা আরিফ ভাই বলেছেন-

    “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটা ভালো পরিবারে বিয়ে হবার ক্ষেত্রে একজন মেয়ের কয়েকটা বার্গেনিং পাওয়ার থাকে।
    ১. তার পরিবারের (বাবা-ভাই) সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থান।
    ২. তার সৌন্দর্য।
    ৩. তার শিক্ষাগত যোগ্যতা।
    ৪. তার জীবনযাপন, ধর্মচর্চা।

    প্রথমটি যদি ভালো হয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেই মেয়ের যেকোনো ভালো পরিবারে বিয়ে হবে। ভালো পরিবার মানে, শিক্ষিত, ধনাঢ্য, সামাজিক প্রতিষ্ঠিত।

    কিন্তু, প্রথম গুণ বা বৈশিষ্ট্যটি একজন মেয়ে অর্জন করতে পারে না। সে পেয়ে গেলে ভালো, না পেলে কিছু করার নেই।

    দ্বিতীয়টিও একই।

    কিন্তু, তার হাতে থাকে তৃতীয় এবং চতুর্থ— শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ধর্মচর্চা।”

    এই আলাপের সমস্যা কী, বলেন তো?

    সমস্যা হলো- এই আলাপে ১ম দুটি না থাকার ফলে আপনাকে পরের দুটি অর্জন করে নিজের ত্রুটি, অসম্পূর্ণতা কমাতে হবে- এমন ধারণাটা বা প্রচলনটাকে স্বীকৃতি দেয়া হলো।

    এছাড়া- ৪র্থটা কড়াভাবে পালন করতে গিয়েই তো ৩য়টা ছাড়তে হচ্ছে! আবার অনেকে তো ৪র্থটা সাধ্যমত পালন করার পাশাপাশি পড়ালেখা শেষ করে। সেক্ষেত্রে অর্জিত গুণ শুধু পড়ালেখাই রইলো।

    “বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে একজন মেয়ে কলেজ-ভার্সিটিতে পড়াশোনা করা এখনো খারাপ চোখে দেখা হয় না। সামাজিকভাবে এপ্রিশিয়েট করা হয়।”

    এখানে সেই সমাজ আর সামাজিক প্রেক্ষাপটকেই মাপকাঠি হিসেবে টেনে আনা হলো- সেই মাপকাঠিকে অভিযুক্তপক্ষ/শক্তি-মেরাজ ভাই অস্বীকার করেছেন।

    “কিন্তু, গত ৪-৫ বছর আগে হঠাৎ করেই ক্যাম্পেইন চালানো হয়। যার ফলে, ফেসবুক ক্যাম্পেইনে প্ররোচিত হয়ে অনেকেই চিন্তাভাবনা ছাড়াই পড়াশোনা বাদ দিয়েছে।”

    চিন্তাভাবনা ছাড়াই পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিলো, এই দোষ কেন শক্তি-মেরাজ নেবেন?

    আর দেখেন- একটা মেয়ে ক্লাস ১০ – ১২ পড়লো, নিজের-বান্ধবী ও পরিবার-আত্মীয়দের বিভিন্ন অবস্থা দেখলো অথচ জীবনের বড় একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভুল (!) করলো- তাই বলা যায়- আসলেই এই শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ আছে! ক্রিটিক্যাল থিংকিং- এমনকি মনে হয় ব্যাসিক থিংকিং পর্যন্ত শিখাতে পারেনি!

    এছাড়া আলেম / মুরুব্বির সাথে পরামর্শেরও তো একটা ব্যাপার আছে। শাইখ হারুন ইযহার সাহেব তো একাধিকবার বয়ানে বলেছেন- “আমরা অনেক মেয়েকে বলেছি- তুমি পড়ো / যা টার্গেট তারচেয়ে বেশি পড়ো। আবার কাউকে বলেছি- পড়া বাদ দেও। এটি প্রত্যেকের ব্যক্তিগত অবস্থা জেনে বুঝে তার জন্য বিশেষ পরামর্শ।” ফেসবুকের পরামর্শই চূড়ান্ত পরামর্শ হওয়া উচিত না।

    আরো কথা আছে- একটা সেক্যুলার উচ্চশিক্ষিত বাবা-মা তো তার মেয়েকে পড়াশোনা ছাড়তেই দেবে না, তো যারা ছাড়তে পেরেছে- বলা যায়- তাদের বাবা-মা উচ্চশিক্ষিত নাও হতে পারেন।

    আর যদি দ্বীন/ইসলামের দোহাই দেয়ার ফলে বাবা-মা রাজী হয়ে থাকেন- তাহলে তো কয়েক মাস / বছরের মধ্যে পরবর্তী ধাপ- বিয়েতে যাওয়া যেতো- যেই দ্রুত বিয়ের কথা একই ব্যক্তিদের দ্বারা প্রচারিত হয়। কিন্তু না, বিয়ের চেষ্টা করে বা চেষ্টা না করে ৫ বছর পর দোষ দেয়া হচ্ছে অন্যদের!

    “যারমধ্যে এমনও ছিলো, মেডিকেলে পড়ুয়া!”

    মেডিকেল পড়ুয়া তো কী? মেডিকেলে সফলভাবে পড়ালেখা শেষ করার হার কত? ১০০%? তা তো না। অনেকেই যারা বিভিন্ন কারণে- স্ট্রেসে অসুস্থ হয়ে / আত্মহত্যা করে / রাজনীতিসহ বিভিন্ন কারণেই তো শেষ পর্যন্ত যায় না। সারাদেশে একজন / কয়েকজন মেয়ে ওরকম থাকলে সমস্যা কী?

    “এই সিদ্ধান্ত এপ্রিশিয়েট করতাম, যদি সামাজিকভাবে তাদের পরিবেশটা এমনভাবে তৈরি থাকতো, যার ফলে এই সিদ্ধান্ত তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে প্রভাব ফেলতো না।”

    সামাজিকভাবে পরিবেশ তৈরি। এটি পোস্টের শেষেও আছে। পরে আসছি।

    “একটা মেয়ে হঠাৎ করেই একা একা সিদ্ধান্ত নিলো সে আর পড়ালেখা কন্টিনিউ করবে না।

    তারপর বাসায় বসে প্রথম কয়েকদিন খুব ভালোভাবে ধর্মচর্চা, জ্ঞানচর্চা করলো। অতঃপর শুরু হলো procrastination।”

    “বাসায় বসে” মানে কি? একা একা আরিফ আজাদের দুটো অমুকের দুটো বই কিনে পড়া? হিসেবে তো অফলাইন/অনলাইনে নির্দিষ্ট সিলেবাস শিক্ষিকার আন্ডারে থেকে ফলো করা উচিত না?

    আর “ধর্মচর্চা, জ্ঞানচর্চা ” কি ঐ পড়াশোনার পাশাপাশি করা যেতো না? অনেকেই করে তো! তারা যদি না করতে পারে- এমনকি জাগতিক শিক্ষা বাদ দিয়েও- সেটা কার দায়!

    “এখন আর না পড়তে ভালো লাগছে, না চাইলে আবার একাডেমিক লাইফে ফিরতে পারছে!”

    দ্বীন/ইলম হচ্ছে ‘পড়া’ আর দুনিয়ার শিক্ষা হচ্ছে ‘একাডেমিক লাইফে’ ফেরা- বাহ!

    “আর যখনই দেখতে পারছে তার বান্ধবীরা ঠিকই পড়াশোনা সম্পন্ন করে কেউ ডাক্তার হচ্ছে, কেউ শিক্ষিকা হচ্ছে, কেউ ভালো পরিবারে বউ হয়ে গৃহিণী হচ্ছে, তখন তার মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে।”

    ডাক্তার, শিক্ষিকা- ক্যারিয়ারের ব্যাপারটা তো গিয়েছেই। আর ভালো পরিবারে বউ হওয়া- সেটার জন্য তো ঐ যে- উপরে ৪ জিনিস থাকার আলোচনা আছে।

    “এই যুগে একজন মাস্টার্স/MBA সম্পন্নকারী এক ছেলে, যে চাকরি করছে, সে কি SSC পাশ কোনো মেয়েকে বিয়ে করবে?”

    করবে, খুব করবে। আর কেউ SSC পর্যন্ত স্পেসিফিক ভাবে পড়তে বলেছে- তার পরে পড়তে নিষেধ করেছে- এমন জানি না। এই সীমা HSC-ও হতে পারে।

    অথচ- আমার পরিচিত কমপক্ষে ২ জন সরকারি চাকরিজীবি ইঞ্জিনিয়ার ক্বওমী মাদরাসায় পড়ুয়া বিয়ে করছে- তাও আবার শুধু হাফেজা, কেউ কেউ তো আলেমা হয়নি, বেশ কয়েকবছর বাকি! (অথচ আমি খুব কম মানুষের সাথেই পরিচিত)

    হাফেজ হতে পারা সৌভাগ্য, আল্লাহর বড় দয়া। এটা স্বীকার করেই আমি বলবো- আমাদের সমাজে ‘হাফেজ’ হওয়াকে একটু বেশিই বড় করে দেখা হয়- সেটা ইনশা-আল্লাহ অন্যদিনের আলোচনা। (আগেই গালি দেয়া দরকার নেই, যারা জানেন- জানেন।)

    এছাড়া- ঐ যে- আরিফ ভাই যেভাবে বললেন- একজন মাস্টার্স পাশ কি SSC পাশ বিয়ে করবে কিনা- আমরা তো বলতে পারি- ঐ মাস্টার্স পাশ কি অনার্স পাশ / মাস্টার্স পাশ বিয়ে করবে? বয়সের হিসেবে? আর বিশেষ করে সমাজের দৃষ্টিতে কমসুন্দরী/অসুন্দরী হলে?

    “রেয়ার কিছু ঘটনা বাদ দিলে ৯৫% ছেলে চাইবে একজন শিক্ষিত মেয়ে বিয়ে করতে। কারণ, বিয়ে মানে তো স্রেফ একজন মেয়ে পাওয়া না, তার যোগ্যতাও। একজন স্বামী চাইবে সে যেন স্ত্রীর সাথে কমিউনিকেট করতে পারে, স্ত্রী যেন তাকে বুঝতে পারে।”

    ১। ৯৫% কোথা থেকে?

    ২। আমি একবার এক অনলাইন ম্যাট্রিমনিত গিয়ে দেখি- ১৫০+ সরকারী চাকরিজীবি পাত্র। আমি অবাক! এদের না এত চাহিদা? বায়োডাটায় যোগাযোগ করে বিয়ে তো হয়ে যাওয়ার কথা। ঢুকে দেখি- ৮০ হাজার আয়, পল্লী বিদ্যুৎ বা এরকম কিছুর ইঞ্জিনিয়ার। উনি চাচ্ছেন- উনার আয় নিয়ে মাথাব্যথা থাকবে না, জানারও প্রয়োজন মনে করবে না – এমন মেয়ে চাচ্ছে। আরো কয়েকটাতে গিয়ে দেখেছি- পড়ালেখা অনেকেই অনার্স পর্যন্ত চায়নি! আপনারাও যাচাই করতে পারবেন।

    ৩। আজকাল ছেলেরা তো মেয়েদের কর্তৃক-ই ‘কচি আসক্তি’র অভিযোগে অভিযুক্ত! লেখক কি জানেন না!

    এমনকি যারা নিজেদের বিয়ে ও মাতৃত্বের শ্রেষ্ঠ সময়টি পড়ালেখায় এবং অবিবাহিত অবস্থায় কাটিয়েছে- তদের কেউ কেউ নামী-বেনামী পেজ থেকে “বয়স্ক বিয়ে করা সুন্নত” এজাতীয় কথা / ইঙ্গিত প্রচার করে।

    “একজনের বড় ভাইয়ের বউ যদি অনার্স পাশ হয়, সে চাইবে না তার বউ SSC পাশ হোক। দিনশেষে, সংসার জীবনে কেউ চায় না ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভুগতে।”

    তারমানে তো বড় ভাইয়ের বউ অনার্স পড়ুয়া সুন্দরী হলে ছোট ভাইয়েরও তাই লাগবে! আর না বলি। যে ছোট ভাই প্রথমত ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভুগছে, সে সমান বিয়ে করেও ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভুগবে। আরো কত কিছুতে ভুগবে!

    “যে মা-বাবা তার সন্তানকে MBA পড়িয়েছেন, সেই মা-বাবা কেনো তাদের পুত্রবধূ বাছাই করবেন SSC পাশ মেয়েকে? তাদেরও তো সমাজে চলতে হয়।”

    কেন আমরা ধরে নিচ্ছি যে- MBA পড়ুয়া ছেলে নিজেই SSC পাশ বিয়ে করার জন্য লাফাচ্ছে না?! হয়ত সে নিজেও তাই-ই চায়!

    “বাংলাদেশের কয়েক হাজার মেয়ে ফেসবুক প্ররোচনায় পড়াশোনা বাদ দিয়েছে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থেকে। পরিবার এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট সেই সিদ্ধান্তকে সাপোর্ট করেনি।”

    এটা নিয়ে আলোচনা গেছে। ঐযে- হয়ত সে এমনিতেও খুব পড়তো না + কয়েক বছর বসে আসে বিয়ে করা বাদ দিয়ে + তার এমন গুনহীনতা হয়ত আছে- যেটি তার মাস্টার্স পাশও পূর্ণ করতে পারতো না! (স্যরি!)

    “আজ এরকম অসংখ্য মেয়ে হতাশায় ভুগছে।

    আর অন্যদিকে উত্থান হচ্ছে মাসনা ইন্ডাস্ট্রির!

    যেই মেয়েগুলো সম্মানের সাথে কারো স্ত্রী হবার কথা ছিলো, যারা সম্মানের সাথে পারিবারিক এবং সামাজিক মর্যাদা পাবার কথা, আজ তাদের অনেকেই শিকার হচ্ছে তাদের সেইসব কথিত শায়খ/দ্বীনি ভাইদের যৌন লালসার।”

    ঐ কয়েক হাজার মেয়ে- যারা পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছে- মাসনা ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের জায়গা হচ্ছে – এমন তো না।

    কওমী, জেনারেল, ক্লাশ ৮ থেকে অনার্স/মাস্টার্স- সব মেয়েই আছে। এছাড়া- তারা নিজেরা কেন প্রথমত রাজী হয় ২য়-৩য় বিয়েতে, তাদের বাবা-মা কোথায় থাকে- কে জানে! নাকি সেলেব্রেটি/বক্তা/বড়লোক পরিবার দেখলে হুঁশ থাকে না?

    নাকি আগে থেকেই কেস-টেস করে মামলা-তুলে নেয়া বাবদ কয়েক/অনেক লাখ হাতানোর ধান্দা? (যেহেতু মোহর কমই ধরা হয়)

    তাছাড়া মা. রশিদ বা আ.ত. আদনানের দায় কেন শক্তি-মেরাজের কাঁধে?

    “এজন্য হঠাৎ করেই যখন ইসলাম প্রচারের নামে এমন কিছু নিয়ে ক্যাম্পেইন হয়, যার জন্য পারিবারিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট তৈরি না করে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়, সেইসব ক্যাম্পেইন আমি সন্দেহ করি।”

    কাঠামো তৈরি করার জন্য শক্তি ভাই বলেছিলেন- সেটি নিয়ে যারা হাসাহাসি করেছিলো, মীম বানিয়েছিলো, আক্রমণ এবং নিরুৎসাহিত যতভাবে করা যায় করেছিলো- তারাই আজ এসেছে মায়াকান্না নিয়ে!

    আবার অনেকে বলছে- “কই, উনি তো দুই বছরেও কিছু আনলো না!”

    প্রথম কথা- সত্যি করে বলেন তো- শক্তি ভাই ডিপ্লোমা বানানোর প্রস্তাবনা রেখেছেন / আনতে চেয়েছেন- যেটি হতে কয়েক বছর লাগতে পারে- সেটির আশায় আপনি আজ পড়াশোনা বাদ দিয়েছেন?

    বাবা-মাকে বলার সময় কি বলেছেন- “অনলাইনে অনেক পরে একজন একটা কোর্স আনবে- সেটির আশায় আমি পড়ালেখা বাদ দিচ্ছি”? নইলে শক্তি ভাইকে কীসের দোষ দেয়া?

    আপনার কি মনে হয়- ২০২২ থেকে আজ পর্যন্ত ঐ ডিপ্লোমা থাকলেও সেটি কি সরকার স্বীকৃত কোনো ডিপ্লোমা হতো? যেটি দেখিয়ে আপনি চাকরি পেতে পারতেন?

    না। সেটি হলে- ব্যসিক অনেক নলেজের হতো- মাতৃত্ব সংক্রান্ত (যেগুলো তাসনীম জারার অ্যাপে ৯-১০ মাসের সাবস্ক্রিপশন কিনে শিখতে হয়), নারী-পুরুষের সাইকোলজি সংক্রান্ত (যেটি নিয়ে আসলাফ অ্যাকাডেমিতে কোর্স আছে), এজাতীয় আরো অনেক পারিবারিক, বিষয়ের সমন্বয়।

    আসলে ইসলাম দুই প্রকার।

    ১। কোটিপতি সাহাবি, এসির ঠান্ডা বাস, প্রতিবছর রওযা-আজওয়ার ইসলাম, পশ্চিমা আইডিওলজি, এডুকেশন, ব্যাংকিং, ডেমোক্রেসি-সহ সবকিছুর সামনে মাথা নত করা ইসলাম- অনলাইনে মিমে দেখা যাওয়া সমকামিতা সাপোর্টকারী মুফতি সাহেবের ভক্তদের ইসলাম। যারা এরকম- তাদেরকে সবসময় একসাথেই পাবেন- নাম না লিখি।

    (ভুল বুঝবেন না, কোটিপতি হোন, কোটি টাকা থেকে আড়াই লক্ষ যাকাত দিন, ওমরায় যান, কিন্তু ওগুলো যেন দ্বীনদার বিল গেটসের ব্যাপারটার মত না হয়, যা আজকাল ইসলামী ম্যাট্রিমনি সাইটগুলোতে খুব দেখা যায়)

    ২। পশ্চিমা আইডিওলজি, এডুকেশন, ব্যাংকিং, ডেমোক্রেসি-সহ সবকিছুর সামনে মাথা নত না করা, সরে আসার জন্য চেষ্টা ও সতর্কতা প্রচারকারীদের ইসলাম।

    পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামো আগেই কিভাবে হবে, যদি এরকম প্রচারণা না হয় এবং প্রচারণার ফলে কয়েক ধাপে অনেক মানুষ সরে না আসে?

    এটাতো অনেকের স্বপ্নে-স্বপ্নে ইসলাম বাস্তবায়নের মত হয়ে গেলো- কিছুই করবো না, কেউ কষ্ট পাবো না, সব ঠিক থাকবে, কোনো বিদেশী নিষেধাজ্ঞা আসবে না, কোনো ‘গরম’ কিছু হবে না, এক সুন্দর সকালে আচমকা সবকিছু রেডি হয়ে যাবে আর ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে!

    কিছু গরম, কিছু ত্যাগ, কিছু ‘আফসোস-লীগ’ / আগেই ভালো ছিলাম তৈরি হবে, পাশাপাশি পরিবর্তন, সংস্কার, আন্দোলন ইত্যাদি এগিয়ে যাবে।

    ঐ একধাপ- যারা সরে এসেছে- এবং আরো যারা আসবে- এভাবেই পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামো তৈরি হবে।

    ***

    বিঃদ্রঃ যে যা পড়ছেন, পড়েন। বাদ দিতে চাইলে বাদ দিন, না দিলে নাই। দ্রুত বিয়ে করলে করেন, না চাইলে না করেন। পড়ালেখা শেষে ক্যারিয়ারের পিছে ছুটলে ছোটেন, না ছুটলে না ছোটেন। ইত্যাদি ইত্যাদি। হ্যান ত্যান।